আগামী মঙ্গলবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক

আগামী  ১১ জুন নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের কাজ শুরু করা এবং গতি আনতে এই উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রীর। নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচরণবিধি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার নবান্ন সূত্রের ‘বর, বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে প্রত্যেক মন্ত্রী, সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, সমস্ত দফতরের সচিব এবং প্রধান সচিবদের। মার্চের শেষ থেকে ভোটের প্রচারে গোটা রাজ্যে ঘুরতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। দীর্ঘ সময় ধরে ভোট নিয়ে প্রচার থেকে উষ্মাও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। একাধিক জনসভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘দু’মাস ধরে ভোট করছে। কোনও কাজই করতে পারছি না।’ একাধিক জেলাশাসক, থানার আইসিকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। তা নিয়েও মমতা ভোটের প্রচারে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। মমতা এ-ও বলেছিলেন, ভোট মিটলে অপসারিত অফিসার, আমলাদের পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে আনবেন তিনি। ফলে প্রশাসনিক বৈঠকের আগে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, মঙ্গলবার বা তার আগেই মমতা রদবদল করে দেন কি না। পুলিশ এবং প্রশাসনে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ রয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে রাজীব কুমারকে ফিরিয়ে আনা হয় কি না, তা নিয়ে। নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধির কারণে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ গত আড়াই মাস ধরে থমকে ছিল। নবান্ন সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের বৈঠক থেকে সেই কাজে গতি আনার বার্তা দিতে পারেন মমতা। কেন এই বৈঠক, এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বাংলায় যে নেতি নেতি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল বিরোধীরা, এই জনাদেশ তাকে খণ্ডন করে দিয়েছে। তৃণমূলের প্রতি মানুষ আস্থা জানিয়েছে। শাসক দলের ভোটও বেড়েছে। একে তাঁর সরকারের প্রতি আস্থা হিসাবেই বিবেচনা করা উচিত। কারণ, সাধারণ নির্বাচন হলেও বিজেপি এই ভোটে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে হাতিয়ার করতে চেয়েছিল। সেই অবস্থায় মানুষ যদি তৃণমূলকে আগের তুলনায় বেশি হারে ভোট দেয়, তাহলে বুঝতে হবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা ধরে রাখতে এবার প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অনেকের মতে, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরিতে হাওয়া দিয়েছিলেন প্রশাসনেরই অনেকে। মহার্ঘ ভাতা ইত্যাদি নিয়ে প্রশাসনের একাংশ ক্রমাগত সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছেন বলেও নবান্নের শীর্ষ স্তরের ধারণা। এবার সেই কারণেই ঝাঁকুনি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের মধ্যে এবার বেশ কিছু জেলা শাসক, অফিসার এবং পুলিশ কর্তাকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে বৈঠকের আগে সোমবার সেই সব অফিসারদের মধ্যে অনেককেই তাঁদের পুরনো পোস্টিংয়ে ফেরানো হবে। রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে ফের আনা হতে পারে পুলিশ কর্তা রাজীব কুমারকেও।

error: Content is protected !!