ভোট ফেরত সমীক্ষাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যে জয়জয়কার তৃণমূল কংগ্রেসের। আর এই জয়ের পর সাংবাদিক সম্মেলনে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ দাবি করে এদিন মমতার সাফ বক্তব্য, ‘আমি খুশি মোদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। ওঁর পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত। আমি ‘পগারপার’ বলেছিলাম। এখন ওদের জিডিপি আর নীতীশ কুমারের পা ধরতে হচ্ছে। মানুষ ওদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।’ তাঁর বক্তব্যে এদিন প্রাধান্য পেল ইন্ডিয়া জোটের সাফল্য। রাজ্যের ফলাফল তো বটেই, গোটা দেশে ইন্ডিয়া জোট যে ফল করেছে তাতে বিরোধীদের মুখে চওড়া হাসি, কোনও সন্দেহ নেই। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, ‘আমি ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের অভিনন্দন জানাই। আমি ওঁদের পাশে আছি। অখিলেশ যাদব, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিহারের ফলাফল সঠিক নয়। তেজস্বী যাদব জানিয়েছেন, এখনও গণনা অনেক বাকি। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী, হেমন্ত সোরেনের স্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি মমতা। বলেছেন, ‘রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধীকেও আমি অভিনন্দন জানিয়ে মেসেজ পাঠিয়েছি। ওঁরা ব্যস্ত, হয়তো দেখার সময় পাননি। কংগ্রেসকে আমি বলেছিলাম ইন্ডিয়ার সঙ্গে থাকলে ১০০ সিট পাবে’। ভোট গণনার ক্ষেত্রেও কারচুপি হয়েছে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘যে যে আসনে আমরা হেরেছি সেগুলো খুবই কম ব্যবধানে। যে সমস্ত অবজার্ভার পাঠানো হয়েছে তাঁরা বিজেপির লোক। পুনর্নির্বাচনের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনে যাব। চার থেকে পাঁচটা সিটে আমাদের ইচ্ছে করে হারানো হয়েছে। তমলুকে ছাপ্পা দিয়ে জিতেছে বিজেপি।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে লেলিয়ে দিয়ে যেভাবে বিরোধীদের চেপে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা কেউ ভাবতে পারেনি। সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স, বিজেপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অত্যাচার সত্ত্বেও গোটা দেশে এই ফল।’ সন্দেশখালির ঘটনাকে ইস্যু করে ভোটের আগে তৃণমূলকে কোণঠাসা করে দিয়েছিল বিজেপি। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সন্দেশখালির মা বোনেরা সত্যিটা বুঝতে পেরেছেন। আমরা সন্দেশখালিতেও জিতেছি। বসিরহাট লোকসভায় বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছি।’ তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, বিজেপির এই হারের পিছনে দায়ী প্রধানমন্ত্রীর অহঙ্কার। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি শুনলাম পোস্টাল ব্যালটে গণনার সময় পিছিয়ে ছিলেন মোদি। এত অহঙ্কার ভাল নয়। আমি মাথা নিচু করে চলি। আমাদের কোনো কৃতিত্ব নেই, সবটাই মানুষের। এখানে প্রচারে এসে আমাদের দলের নেতাদের নামে কুৎসা রটিয়ে গেছে বিজেপি। আমি প্রত্যেকের নামে মানহানির মামলা করব।’ বুধবার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক রয়েছে l মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই মুহূর্তে কাজের চাপ থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারছেন না তিনি। তবে পাঠানোর চেষ্টা করছেন অভিষেক ব্যানার্জিকে। গোটা দেশের মধ্যে রেকর্ড মার্জিনে জয় পেয়েছেন অভিষেক ব্যানার্জি। সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা। প্রত্যেক প্রার্থীর সঙ্গেও দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ‘সন্দেশখালির রায়ে আমি খুশি’। বসিরহাট লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয় নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, “যে সন্দেশখালি নিয়ে এত অপপ্রচার করেছে, সেই সন্দেশখালিতেও আমরাই জিতেছি। উত্তরবঙ্গে ওদের হোম মিনিস্টারের মেরুদণ্ড মানুষ ভেঙে দিয়েছে।” একইসঙ্গে মমতা বলেন, “বাংলার মানুষের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। বিজেপির তৈরি করা সমীক্ষা দেখে আমার মনে হয়েছিল আমি কি নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছি? বিজেপি বাংলার প্রশাসনকে অপমান করেছে। একের পর এক ডিএম, আইসি বাতিল করেছে। বিজেপির এক গদ্দার এই সব করেছে। আমি খুশি বাংলার মানুষের রায়ে।”
Related Posts
ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে অপারেশন হল না ৪ বছরের অসুস্থ শিশুর
রেটিনার অপারেশন করাতে ভোর থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত খালি পেটে রাখা হয়েছিল চার বছরের এক শিশুকে। কিন্তু দুপুর গড়ালেও তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হল না! কাহিল শিশুটির অসহায় বাবা-মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘স্যার অপারেশন কখন হবে?’ তাঁদের জানানো হল, ‘আন্দোলনের জন্য সংজ্ঞাহীন করার চিকিৎসক (অ্যানাস্থেটিস্ট) আসেননি। তাই আজ অপারেশন হবে না!’ তারপর প্রায় কেঁদে ফেলে শিশুটির […]
রাজ্যকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলার অধিকার নেই রাজ্যপালের, সি ভি আনন্দ বোস এক্তিয়ারের বাইরে কাজ করছেন, মন্তব্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির
ভেঙে পড়েছে রাজ্যের অর্থনীতি। এই মর্মে বাংলার অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শুধু তাই নয়, জরুরি বৈঠকের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। যেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত তুঙ্গে। এই আবহে রাজ্যপাল বোসকে নিজের এক্তিয়ারের কথা মনে করিয়ে দিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি। এ দিন বিচারপতি জানান, এই রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা […]
রাজ্যপালকে ২১টি বিশবিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে নির্দেশ সুপ্রিমকোর্টের
জ্যপালকে ২১ টি বিশবিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবারের মধ্যেই তাঁর কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যপালকে। দ্রুত ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যপালকে পুরোনো নির্দেশ মেনেই।এমনটাই দাবি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। রাজ্যের সুপারিশ দেওয়া নাম থেকেই রাজ্যকে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট এমনই নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপালকে। দাবি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। […]