বিজেপির ৪০০ দূরঅস্ত, ১৫০-র আশা নেই, প্রথম দফার পর হুঙ্কার রাহুলের

প্রথম দফার ভোটের পর কপালে ভাঁজ ফেলার মতো প্রশ্ন এটাই। অথচ, নরেন্দ্র মোদির দাবির সঙ্গে পরিসংখ্যানে ফারাক থেকে যাচ্ছে। মোদি নিজে বলছেন, তাঁকে তৃতীয়বার সরকারে নিয়ে আসার জন্যই নাকি গোটা ভারত উৎসবের মেজাজে ভোট দিচ্ছে। তাহলে প্রথম দফায় ভোটের হার দেখে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব টেনশনে কেন? কারণ, ২০১৯ সালের তুলনায় ভোটদানের শতকরা হার এক ধাক্কায় ৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। ২০১৯ সালে প্রথম দফায় ৯১টি আসনে এই পরিসংখ্যান ছিল ৬৯ শতাংশ। সেখানে চব্বিশে প্রথম দফার ১০২ আসনে ভোটদানের হার ৬৩ শতাংশ। নজর করার মতো বিষয় হল, এই প্রবণতা শুধু একটি-দু’টি রাজ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, ত্রিপুরা- সর্বত্র কমেছে প্রদত্ত ভোটের হার। আর তাতেই বাড়ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্বেগ। কেন এই প্রবণতা? তাহলে কি ডেডিকেটেড ভোটার কমছে? বিজেপিকে কোণঠাসা করে রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘প্রথম দিনেই জনতা রায় দিয়েছে। ৪০০ দূরঅস্ত, বিজেপি ১৫০ আসনের বেশি পাবে না।’ তেজস্বী যাদব বলেন, ‘অব কী বার ৪০০ পার সিনেমা প্রথম দিনেই সুপার ফ্লপ।’ অখিলেশ যাদবের বক্তব্য, ‘যে বার্তা প্রথম দফায় পাওয়া যাচ্ছে, কোথাও বিজেপির কোনও ম্যাজিক টের পাওয়া যায়নি।’ বিরোধী শিবিরেই শেষ নয়। ভোটের হার যে কমেছে, স্বীকার করেছেন রাজস্থানের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। তাঁর কথায়, ‘ভোটের হার কেন কমেছে, তার নির্দিষ্ট কারণ নেই। অনেক কারণ থাকতে পারে।’ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব হতাশ কেন? কারণ, একের পর এক রাজ্য থেকে সাংগঠনিক ব্যর্থতার খবর আসছে। বুথ ম্যানেজমেন্ট কেন ঠিকভাবে হল না, সেটাই অবিলম্বে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিহারে ২০১৯ সালে ভোটের হার ৫৩ শতাংশ ছিল। সেটাই এবার ৪৮.৫ শতাংশ। উত্তরাখণ্ড বিজেপি শাসিত রাজ্য। ২০১৯ সালে প্রথম দফায় ভোটের হার ছিল ৬২ শতাংশ। সেখানে এবার মাত্র ৫৪ শতাংশ। রাজস্থানে ২০১৯ সালের তুলনায় ভোটদানের হার কমেছে ৭ শতাংশ। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আচরণে কম্পমান বিজেপি। উনিশে এরাজ্যের ৬৬ শতাংশের তুলনায় এবার প্রদত্ত ভোট ৫৮ শতাংশ। মহারাষ্ট্রের ভোটদান এক ধাক্কায় কমেছে ৮ শতাংশ। মধ্যপ্রদেশে ৬ শতাংশ। এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরবঙ্গের তিনটি আসনে প্রথম দফায় ভোট শতাংশ হয়েছে ৮১.৯১ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই পরিসংখ্যান ছিল ৮৪.৭ শতাংশ। চিন্তা বাড়িয়েছে আলিপুরদুয়ার এবং এখানকার বন্ধ চা-বাগান। ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রায় কিছুই চা-বলয়ে কার্যকর হয়নি। ফলে গেরুয়া শিবিরের ঝুলি ভরিয়ে যাঁরা আগেরবার ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই কাজের খোঁজে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন। যাঁরা আছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া জমির পাট্টা, মজুরি এবং চা-সুন্দরী প্রকল্প তাঁদের নড়বড়ে করে দিয়েছে বলেই আশঙ্কা বিজেপির। 

error: Content is protected !!