আর্টিস্ট ফোরামের ডাকা গণ অবস্থানে যোগ দিলেন দেব

একজোট হয়ে অভয়ার মৃত্যুর বিচারের দাবিতে সরব বাংলার তারকারা। আর জি করের নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার কিশোর কুমারের মূর্তি সংলগ্ন এলাকায় আর্টিস্ট ফোরামের গণ অবস্থান হয়। তাতেই পাশাপাশি দেখা যায় অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ দেব এবং অভিনেত্রী তথা বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে। মোমবাতি জ্বালিয়ে বিচারের দাবিতে সরব হন দেব। শহরে ছিলেন না। ফিরেই আবার বাবার অসুস্থতার খবর পান। সোজা চলে যান হাসপাতালে। এত কিছুর মধ্যে আর্টিস্ট ফোরামের ডাকা গণ অবস্থানে যোগ দেন দেব। সেখানেই ধর্ষণের মতো অপরাধের কড়া শাস্তি চাইলেন অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ। “যাঁরা ধর্ষণ করবে তাঁদের একটাই শাস্তি, ফাঁসি”, বললেন তারকা। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ‘রাজনৈতিক’ আবেদনও জানালেন তিনি। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেন, “যা হয়েছে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সবাই চাই, বাংলার প্রত্যেকটা মানুষ ভারতবর্ষের প্রত্যেকটা মানুষ চাই যে যারা রেপিস্ট, যারা এর সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের সবার ক্যাপিট্যাল পানিশমেন্ট দরকার। আজ থেকে নয়, দুই-আড়াই বছর আগে থেকে বলছি যে যতদিন না মানুষের মধ্যে ভয় হবে, যতদিন না মানুষ ভয় পাবে ততদিন এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে থাকবে। আমাদের এখনই ধর্ষকদের ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দেওয়া শুরু করতেই হবে।” অভিনেতা মনে করেন রাজনৈতিক সুবিধাবাদিদের প্রভাবে এই আন্দোলন গতিপথ হারাচ্ছে। তিনি চান, ভারতবর্ষের প্রত্যেকটা মেয়ে যেন রাত দশটার পর নিশ্চিন্তে রাস্তায় বেরোতে পারে, তবেই এই আন্দোলনের সার্থকতা। এর পরই দেব বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে একটাই কথা বলতে চাই। যদি রাজনৈতিক হয় তাহলে ১১ বছরে প্রথমবার রাজনৈতিকভাবেই বলছি যেই ভারত সরকার রাতারাতি নোটবন্দি নিয়ে আসতে পারে, যেই ভারত সরকার ৩৭০ আর্টিকেল দমন করতে পারে, যেই ভারত সরকার বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল সেখানে রামমন্দির করতে পারে, যেই ভারত সরকার দুহাজার টাকার নোট আবার ফিরিয়ে নিতে পারে… সেই ভারত সরকারের কাছে শুধু বাংলার ১০ কোটি নয়, ১৪০ কোটি মানুষের তরফ থেকে আমার অনুরোধ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে রইল যে এখনই এমন একটা বিল পাশ করা উচিত সংসদে যেখানে কোনও ধর্ষণের অপরাধ যদি প্রমাণিত হয়ে যায় তাহলে তাকে এক মাসের মধ্যে ক্যাপিট্যাল পানিশমেন্ট দিতে হবে। তাহলেই দেশটা শুধরোবে।”  এদিন সন্ধ্যায় টালিগঞ্জের প্রতিবাদ মঞ্চে দেখা যায় একাধিক তারকাকে। একদিকে যেমন সমুন্ত মুখোপাধ্যায়, অলকানন্দা রায়ের মতো বর্ষীয়ান তারকাকে দেখা যায়, অন্যদিকে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম, চৈতি ঘোষাল, দিগন্ত বাগচী, দেবলীনা দত্ত, অর্জুন চক্রবর্তী, গৌরব চক্রবর্তীরা বিচারের দাবিতে সরব হন। ন্যায় না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে বলেই জানান দেবলীনা দত্ত। ‘এর শেষ দেখে ছাড়ব’, বলেন অভিনেত্রী। নারী, শিশু ও পশু কেউ নিরাপদে নেই বলেই মনে করেন অভিনেত্রী। ঝাড়গ্রামের হাতি হত্যার ঘটনাও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ জানান তিনি। আরজি করের ঘটনা দেখে এক জন সাধারণ মানুষ ও নাগরিক হিসেবে তিনি লজ্জিত বলেই জানান অর্জুন চক্রবর্তী। অভিনেতা মনে করেন এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। এমন অপরাধের জন্য কড়া আইন দরকার বলেও মনে করেন তিনি। এই অবস্থানে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

error: Content is protected !!