ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে অপারেশন হল না ৪ বছরের অসুস্থ শিশুর

রেটিনার অপারেশন করাতে ভোর থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত খালি পেটে রাখা হয়েছিল চার বছরের এক শিশুকে। কিন্তু দুপুর গড়ালেও তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হল না! কাহিল শিশুটির অসহায় বাবা-মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘স্যার অপারেশন কখন হবে?’ তাঁদের জানানো হল, ‘আন্দোলনের জন্য সংজ্ঞাহীন করার চিকিৎসক (অ্যানাস্থেটিস্ট) আসেননি। তা‌ই আজ অপারেশন হবে না!’ তারপর প্রায় কেঁদে ফেলে শিশুটির বাবা বললেন, ‘তাহলে কবে হবে?’ এক স্বাস্থ্যকর্মীর উত্তর, ‘সেটা বলতে পারব না!’ কতদিন থাকতে হবে, কবে অপারেশন হবে, কোনও উত্তরই দিল না হাসপাতাল। ছুটি চাইলেন শিশুর বাবা। হাসপাতাল এবার জানাল, ‘আমরা ছুটি দিতে পারব না। আপনারা নিজের দায়িত্বে নিয়ে যান।’ তারপর বাধ্য হয়েই অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাসপাতাল ছাড়লেন বাবা-মা। বুধবার এমন চরম দুর্ভোগে পড়তে হল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। যাওয়ার আগে শিশুটির বাবা বললেন, ‘আমাদের জলে ফেলে দেওয়া হল।’ শিশুর বাবা মহম্মহ আলিমুদ্দিন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘চিকিৎসকরা প্রথমে ওষুধ দিয়েছিলেন। না ঠিক হলে অপারেশন করতে বলেছিলেন। মঙ্গলবার অপারেশন হবে বলেছিলেন। কিন্তু পরে বাতিল করে দেন। বলেন, বুধবার হবে। ফলে দুপুর দু’টো পর্যন্ত ছেলেকে খালি পেটে রেখেছিলাম। তারপর একজন বললেন, অজ্ঞান করার ডাক্তার নেই। কবে আসবেন বলতে পারব না। তখন আমরা কান্নাকাটি করে বললাম, ছুটি দিয়ে দিন। তাও দিল না। ডিসচার্জ করার কোনও নথিপত্র দিল না। বাধ্য হয়েই আমরা চলে যাচ্ছি। দেখি যদি অন্য কোথায় দেখানো যায়। আরও একজনের অপারেশন বাতিল হয়েছে। তিনিও মুর্শিদাবাদে থাকেন। অথচ আমার ছেলে যে ওয়ার্ডে ছিল, সেখানে অন্য কোনও রোগী নেই। তাও অপারেশন হল না। তার মধ্যে আমরা মুর্শিদাবাদের দু’জন তো চলেই যাচ্ছি।’ শুধু অপারেশন বাতিল নয়। অভিযোগ, মঙ্গলবারের পর বুধবারও একাধিক রোগী ফিরে গিয়েছেন ইমারজেন্সি থেকে। ভর্তি নেওয়া হয়নি তাঁদের। বাগমারির বাসিন্দা এক বৃদ্ধা ভর্তি হতে এসে স্ট্রেচারেই শুয়ে রইলেন। তারপর ফিরে গেলেন বাড়ি।

error: Content is protected !!