ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের আরও একটি কীর্তি প্রকাশ্যে, তাঁকে মানসিক রোগী বলে সন্দেহ করছেন সিবিআই গোয়েন্দারা

আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভল্যান্টিয়ার সঞ্জয় রাইয়ের আরও এক কীর্তি সামনে এলো। তাকে এবার মানসিক রোগী বলে সন্দেহ করছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। ঘটনার রাতে এক মহিলার সঙ্গে ফোনে কথা বলে সঞ্জয় রাই। সেখানেও আরও এক কীর্তি। সূত্রের খবর ঘটনার রাতে এক মহিলাকে ভিডিও কল করে ধৃত সঞ্জয় । সেই ভিডিও কলে সে ওই মহিলাকে জামাকাপাড় খুলে নগ্ন হতে বলে অর্থাৎ স্ট্রিপ(Strip) করতে বলে। সে প্রায়ই মদ্য পান করতো। রেড লাইট এলাকাতেও যেত। ধৃত সঞ্জয় রাই নাকি সেই রাতে যৌনপল্লিতে গিয়েছিল। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা সঞ্জয় রাইয়ের গতিবিধি ট্র্যাক করেই জানতে পেরেছে যে সেই রাতে সঞ্জয় রাই যৌনপল্লিতে গিয়েছিল। তারপর সেখান থেকে সে আরজি কর হাসপাতালে ফিরে এসেছিল। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত ১১টা নাগাদ আরজি কর হাসপাতালের সিসিটিভিতে অভিযুক্তকে দেখা যায়। এর কিছু পরে সঞ্জয় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়। পরে আবার হাসপাতালে ফেরে সে। সেমিনার হলের কাছে সিসি ক্যামেরায় তাঁকে দেখা যায় ভোর ৪টে নাগাদ। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর সেখান থেকে আবার বেরিয়ে যায় সঞ্জয় রাই। রাতে আরজি কর থেকে বেরিয়ে সঞ্জয় কোথায় গিয়েছিল, সেই খোঁজ করতে জানা যায় যে অভিযুক্ত সেই সময় যৌনপল্লিতে গিয়েছিল। সঞ্জয়ের মোবাইলে প্রচুর পর্ন ভিডিও রয়েছে। এখান থেকেই সঞ্জয়ের মন বোঝায় চেষ্টা করছেন সিবিআই তদন্তকারীরা। তাই তা জানার জন্য মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। অর্থাৎ তদন্তকারীরা সঞ্জয় রাইয়ের সাইকোলজিক্যাল টেস্ট করাতে চাইছেন। সিবিআইয়ের টিমের সঙ্গে রয়েছে এইমসের বিশেষজ্ঞদল। তারা তদন্তের বর্তমান অবস্থায় সঞ্জয় রায়ের সাইকোলজিক্যাল টেস্ট করাতে চাইছেন।  সম্ভবত আজই ওই টেস্ট করা হবে। তার সঙ্গে কথা বলে, তার মানসিক বিকৃতি রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্ট হবে। পাশাপাশি সঞ্জয়ের যে মোবাইল ফোন থেকে বিকৃত পর্নগ্রাফি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সঞ্জয়ের আরও অনেক কীর্তি সামনে এসেছে। তার মধ্যে একটি হল সে পেশেন্ট পার্টির লোকজনের ফোন নম্বর জোগাড়া করে তাদের ফোন করত। কাশীপুরের এক তরুণীকে বিভিন্ন সময়ে ফোন করে এভাবেই উত্ত্যক্ত করত সঞ্জয়।  মাস তিনেক আগে আরজি করে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। সঞ্জয় সে সময়ে তাঁকে সাহায্য করে। সেই সুযোগে ওই তরুণীর প্রেসক্রিপশন থেকে দেখে নেয় তার ফোন নম্বর। ব্যস! এর পর থেকে শুরু হয় ওই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করা। ব্যক্তিগত জীবনেও একজন গুণধর এই সঞ্জয়। বিবাহিত জীবন খুবই অস্থির। একই সময়ে একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলার অভ্যাস তার। তার জীবন ও যাপন যেন নিছক লোভ লালসা আর প্রভাব প্রতিপত্তির সাধনা।  প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার ১০ ঘণ্টার মধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। পরে জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার ধৃত সঞ্জয় রায়কে নিয়ে আরজি কর হাসপাতালে যান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। সেখানে সেদিনের ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হয়। তারপর থেকে অবশ্য এখনও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

error: Content is protected !!