প্রথম ম্যাচেই রুদ্ধশ্বাস জয় কেকেআরের

রুদ্ধশ্বাস জয়। হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। নায়ক হয়ে মাঠ ছাড়ার সুযোগ হাতছাড়া করলেন হেনরিচ ক্লাসেন। শেষ ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে জয় নিশ্চিত করলেন নাইটদের তরুণ পেসার হরষিত রানা। নিশ্চিত হারের মুখ থেকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন হায়দরাবাদকে। মিচেল স্টার্কের শেষ ওভারে বিশাল চারটে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসেন বড় চেহারার প্রোটিয়া অলরাউন্ডার। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ক্লাসেন যে ফর্মে ছিলেন, মনে হয়েছিল ঘরের মাঠে শুরুতেই হয়তো হোঁচট খেতে হবে নাইটদের। ম্যাচের এই অবস্থায় অভিজ্ঞ আন্দ্রে রাসেলকে বল না দিয়ে শ্রেয়স বল দেন হরষিতকে। অনেকেই হয়তো ভ্রু কুঁচকেছিলেন। কিন্তু ২০ লক্ষের তরুণ পেসারই ম্যাচ জেতালেন। ড্রেসিংরুম থেকে স্লো বল করার নির্দেশ আসে। তাতেই বাজিমাত। প্রত্যাশিতভাবেই গৌতম গম্ভীরের মস্তিষ্ক পার্থক্য গড়ে দিল। তৃতীয় বলে শাহবাজ আউট। তখনও ৪ বলে ৬ রান দরকার। পঞ্চম বলে আউট ক্লাসেন। শেষমেষ ৪ রানে জয় কলকাতার।  রাসেলের দাপটে ঘরের মাঠে জয় দিয়ে আইপিএল বোধন কলকাতা নাইট রাইডার্সের। শাহরুখ খানের উপস্থিতিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৪ রানে হারল নাইটরা। অভিষেকেই হিট গৌতম গম্ভীর, শ্রেয়স আইয়ার কম্বিনেশন। আইপিএলের ইতিহাসে দুই সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সের দ্বৈরথ উপভোগ্য হল না। পুরনো দলের বিরুদ্ধে এক উইকেট সংগ্রহ হায়দরাবাদের অধিনায়কের। অন্যদিকে বেগুনি জার্সিতে অভিষেকে উইকেটহীন ২৪.৭৫ কোটির বোলার। শুধু তাই নয়, বেধড়ক মার খেলেন। শনিবার রাতে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রান তোলে কেকেআর। জবাবে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২০৪ রানে থামে হায়দরাবাদ। ২৫ বলে ৬৪ রান আন্দ্রে রাসেলের। ৪০ বলে ৫৪ রান ফিল সল্টের। শুরুটা নড়বড়ে হলেও দুই নাইটের ব্যাটে ভর করে বড় জয় তুলে নিল কেকেআর।  টসে জিতে নাইটদের ব্যাট করতে পাঠান প্যাট কামিন্স। ইডেনের পিচে পেসাররা সাহায্য পায়। মাত্র এক ওভারে এক বলের ব্যবধানে ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৭) এবং শ্রেয়স আইয়ারকে (০) তুলে নেন নটরাজন। তার আগেই অবশ্য রান আউট হয়ে ফিরে যান সুনীল নারিন (২)। ৩.৫ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে নাইটরা। কেকেআরের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে শূন্যতে আউট হন শ্রেয়স।‌ রান পাননি নীতিশ রানাও (৯)। ছয় নম্বরে নেমে সল্টকে সঙ্গত দেন রমনদীপ সিং। দলের খারাপ দিনে নাইটদের জার্সিতে জ্বলে উঠলেন। পঞ্চম উইকেটে ৫৪ রান যোগ করে এই জুটি। ৪০ বলে ৫৪ রান করে আউট হন সল্ট। তাতে ছিল ৩টি ছয় এবং চার। কেকেআরের ইনিংসের ফাউন্ডেশন গড়েন সল্ট, শেষ করেন রাসেল। আট নম্বরে নেমে বিধ্বংসী ইনিংস। এই রাসেলকে দেখতেই যে ইডেনে এসেছিল কলকাতা। গত দু”বছর হতাশ করেন ক্যারিবিয়ান তারকা। কিন্তু শনি রাতে ফিরে পাওয়া গেল পুরোনো রাসেলকে। ম্যাচের রং বদলে দেন তিনি। মায়াঙ্ক মারকান্ডের ওভারে তিনটে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন। ২০ রানের মাথায় জ্যানসেনের হাতে ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু বল মাটি ছোঁয়ায় বেঁচে যান রাসেল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দানবীয় ইনিংস। ২৫ বলে ৬৪ রান করেন রাসেল। ইনিংসে ছিল ৭টি ছয়, ৩টি চার। ১৫ বলে ২৩ রান করেন রিঙ্কু সিং। জবাবে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় ম্যাচ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল সানরাইজার্স। ১১১ রানে ৪ উইকেট হারায় হায়দরাবাদ। মায়াঙ্ক আগরওয়াল (৩২), অভিষেক শর্মা (৩২), রাহুল ত্রিপাঠি (২০) শুরুটা ভাল করলেও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি। একমাত্র অনবদ্য পারফরম্যান্স হেনরিচ ক্লাসেনের। ম্যাচটা প্রায় বের করে নিচ্ছিলেন। ২৫ বলে ৫০ সম্পূর্ণ করেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার। স্টার্কের শেষ ওভারে চারটে ছয় মারেন ক্লাসেন। ওভারে ২৬ রান। মোট ৮টি ছয়। শেষ বেলায় ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন ইডেনে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ২৯ বলে ৬৩ রান করে আউট হলেন ক্লাসেন। থামল সানরাইজার্স। জয়ের পর মাঠে নেমেই শ্রেয়স আইয়ার এবং চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতকে অভিনন্দন জানান শাহরুখ। তারপর বিপক্ষ শিবিরের মুথাইয়া মুরলিধরনের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। শাহবাজ, সামাদদের সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা যায় কিং খানকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!