SSC-তে প্যানেল-বহির্ভূত নিয়োগ সম্পূর্ণ জলিয়াতি, ‘অযোগ্য এবং যোগ্য’ বাছাই নিয়েও প্রশ্ন সুপ্রিমকোর্টের, ঝুলে রইল চাকরিহারাদের ভাগ্য! 

সন্দেশখালির পর এবার রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট ৷ তবে সাময়িক স্বস্তি পেলেও এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কলকাতা হাই কোর্ট তাদের রায়ে জানিয়েছিল, মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন, এই সময় নির্বাচন চলছে। এখন সিবিআই তদন্ত করলে তো পুরো মন্ত্রিসভা জেলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট, যা কার্যকর করা সম্ভব নয়। ওই রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তার পরেই সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। অন্যদিকে প্যানেল বহির্ভূত চাকরিকে সম্পূর্ণ জালিয়াতি বলে মন্তব্য করে রাজ্যের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করা হবে কী উপায়ে? তা আদৌ সম্ভব? আর যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করতে গিয়ে কোনও ভুল হবে না, তারই বা কী নিশ্চয়তা?তবে এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের যে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট তাই সোমবার বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট ৷ একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রডূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই যে তদন্ত চলছে তার উপর কোনও স্থগিত দেওয়া হচ্ছে না। এর আগে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেলকে বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট ৷ শিক্ষক ও অ-শিক্ষক কর্মীদের সমস্ত নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এরপরই সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ৷ সেই মামলার শুনানি হয় এদিন ৷ এরপর পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ মে দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে এদিন শুনানি হয় ৷ সেখানেই এদিন এসসি এবং রাজ্য সরকারে নিয়োগ বাতিল করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশকে স্থগিত করার আর্জি জানিয়েছিলেন ৷ সেই আর্জি অবশ্য এদিন প্রত্যাখ্যান করেছে শীর্ষ আদালত ৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় পর্যবেক্ষণে বলেন, “এটা কীভাবে করা হয়েছে ! ওএমআর শিট সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, মিরর ইমেজ নেই, প্যানেলে নেই এমনভাবে লোক নিয়োগ করা হয়েছে ! এটি একটি সম্পূর্ণ জালিয়াতি ৷” প্রধান বিচারপতি জানতে চান, যে ওএমআর শিটগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেই অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলি আলাদা করা সম্ভব কিনা। এরপরই প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, “আপনাদের সকলের জন্য বলা হচ্ছে, কিসের ভিত্তিতে কোথায় বৈধ এবং অবৈধ নিয়োগকে আলাদা করা সম্ভব এবং কারা জালিয়াতির সুবিধাভোগী তা জানাতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, পুরো জিনিসটি জালিয়াতিতে পরিপূর্ণ ৷”

error: Content is protected !!