মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টার স্ট্রোক। শনিবার বেলা ১টা নাগাদ সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে হাজির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর সেখানে গিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলির রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হল। নতুন করে কমিটি গড়ার কথাও জানান মমতা বন্দ্যোপাদধ্যায়। আর জি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বারবার আলোচনার প্রস্তাব গিয়েছে নবান্নের তরফে। ৩ দিন দুঘণ্টা করে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী অপেক্ষা করার পরেও আলোচনার টেবিলে আসেননি আন্দোলনকারীরা। এদিন সটান জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনাস্থলে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়েই তিনি ঘোষণা করেন, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলির রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হল। শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁকে দেখে “We Want Justice” স্লোগান ওঠে। স্লোগানে কোনও আপত্তি জানাননি মমতা। বরং জানান আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে তাঁর। তিনি চাই তিলোত্তমার বিচার। আন্দোলনকারীদের দাবি বিবেচনা করার পাশাপাশি রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, “আর জি কর মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতিও ভেঙে দিলাম। বাকি সব মেডিক্যাল কলেজেরও ভেঙে দিলাম। নতুন করে তৈরি করব। আমার উপর ভরসা থাকলে, দোষীরা শাস্তি পাবেন।”মুখ্যমন্ত্রী কথায়, “আপনারা আমাদেরই ঘরের ভাইবোন। আপনারা কাজে যোগ দিন। আপনাদের প্রতি আমি কোনও অবিচার করব না। হাসপাতালের উন্নতি, পরিকাঠামো, সব কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি এবং করব। সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, মাল্টি সুপার হাসপাতালে যত রোগী কল্যাণ সমিতি আছে, তাতে অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব। জুনিয়র ডাক্তাররাও সদস্য হবেন, সিনিয়র ডাক্তারও থাকবেন, নার্সও থাকবেন, একজন জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, “দোষীরা কেউ আমার শত্রু বা বন্ধু নন। আপনারা যাদের বন্ধু ভাবছেন আমার, আমি তাদের চিনি না। আমাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে আসেন তাঁরা। চূড়ান্ত হয়ে আসে আমার কাছে। মাত্র একমাস যারা এসেছে, তাদের কেউ যদি খুন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, সাধ্যমতো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”জুনিয়র ডাক্তারদের কাজের প্রতি আস্থা রেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা অনেক কাজ করেন। আপনাদের আমাদের প্রয়োজন। ভরসা রাখলে, আস্তে আস্তে আমি সব করে দেব। একদিনে সব হয় না, আমাকে একটু সময় দিন। দুর্নীতির কোনও কিছু, কোনও টেন্ডার আজ পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি। রোগী কল্যাণ সমিতি কী কাজ করে, আমি জানি না। আমার আওতায় পড়ে না। আপনাদের অভিযোগ থাকলে অবশ্যই পদক্ষেপ করব। বিনা কারণে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। তদন্তে প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাজা দেব। মনে রাখবেন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। ১৭ তারিখেও শুনানি আছে। আমি চাই না, কোনও ক্ষতি হোক আপনাদের। আমি মুখ্যমন্ত্রী নই, আপনাদের দিদি হিসেবে বলতে এসেছি।”
Related Posts
কলকাতায় শ্যুটআউট, মাঝ রাতে পার্ক স্ট্রিটের কাছে গুলিবিদ্ধ যুবক
খাস কলকাতায় চলল গুলি৷ শুক্রবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন মির্জা গালিব স্ট্রিটে৷ এই ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়৷ পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল বিকেলে বাইকের রেষারেষিকে কেন্দ্র করে মির্জা গালিব স্ট্রিটে গন্ডগোলের সূত্রপাত হয়৷ স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, এই ঘটনার গভীর রাতে ওই এলাকায় চড়াও […]
আন্দোলন হোক, কিন্তু বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মানা যায় না, অবহেলার কারণে মৃত্যু খুনের সমতুল্য: অভিষেক
বিনা চিকিৎসায় কোন্নগরের ২২ বছরের তরতাজা যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবরে উদ্বিগ্ন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে যুক্তিযুক্ত ও সমর্থনযোগ্য বলেও, তাঁদের কাছে তিনি আবেদন করেছেন, জুনিয়র ডাক্তাররা যেন এমন পদ্ধতিতে আন্দোলন করেন যাতে, চিকিৎসা পরিষেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিঘ্ন না ঘটে। এভাবে আর কারও প্রাণ যাতে না যায়। শুক্রবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই […]
পুজোর আগেই উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ, হাইর্কোটের নির্দেশ আসার পরেই আশার কথা শোনালেন রাজ্যের শিক্ষমন্ত্রী
গত ২০১৫ সাল থেকে ঝুলে ছিল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ অবশেষে ৮ বছর পরে দেখা গেল আশার আলো৷ উচ্চ প্রাথমিকের প্রায় ১৪ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসি-র উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। ৪ সপ্তাহের মধ্যে নতুন […]