অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত

এ-গ্রুপের চারটি ম্যাচের মধ্যে ৩টিতে জয় তুলে নেয় ভারত। টিম ইন্ডিয়ার ১টি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। এ-গ্রুপের এক নম্বর দল হিসেবে সুপার এইট রাউন্ডের যোগ্যতা অর্জন করে ভারত। রোহিত শর্মারা সুপার এইট রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে হারিয়ে দেন আফগানিস্তানকে। পরে সুপার এইটের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশকে। এবার সুপার এইট রাউন্ডের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। অজিরা গ্রুপ লিগে তাদের চারটি ম্যাচেই জয় তুলে নেয়। পরে সুপার এইট রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারালেও দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। এবার সেন্ট লুসিয়ায় ভারতের কাছে হেরে বসায় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় অস্ট্রেলিয়ার সামনে। দাপুটে জয়ে ভারত শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলে। এই ম্যাচে কার্যত বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন রোহিত। দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অধিনায়ক হিসেবে যে দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ, তাই করে দেখালেন তিনি। কখনও কভার ড্রাইভ তো কখনও আবার এগিয়ে এসে হেলায় বলকে সোজা মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছিলেন রো‘হিট’ ম্যান। খেললেন ৪১ বলে ৯২ রানের দুরন্ত ইনিংস। একটুর জন্য হাতছাড়া করলেন শতরান। সেইসঙ্গে, পন্থের সংগ্রহে ১৫ রান। অন্যদিকে, সূর্যকুমার যাদব এবং শিবম দুবেও যোগ্য সঙ্গত করেন দলকে। সূর্যকুমার করেন ১৬ বলে ৩১ রান। তবে ভারতের দুটি ক্যাচ ফেলে অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচে শিবম দুবে করেন ২৮ রান। অন্যদিকে, রবীন্দ্র জাদেজা ৯ রানে এবং হার্দিক পান্ডিয়া ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষপর্যন্ত, নির্ধারিত ২০ ওভারে, ৫ উইকেটের বিনিময়ে ২০৫ রান তোলে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২টি করে উইকেট পান মিচেল স্টার্ক এবং মার্কাস স্টয়নিস । রোহিত এবং সূর্যকুমার, দুজনকেই আউট করেন মিচেল স্টার্ক। বলা যেতে পারে, এই ম্যাচের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেটই নেন তিনি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রাথমিকভাবে বেকায়দায় পড়ে অস্ট্রেলিয়াও। ডেভিড ওয়ার্নার ফিরে যান মাত্র ৬ রানে। কিন্তু হাল ধরেন অধিনায়ক মিচেল মার্শ এবং ট্রেভিস হেড । যদিও মার্শের ক্যাচ মিস করে ভারত। আর এরপরই ক্রমশ ভয়ঙ্কর হতে শুরু করেন এই দুই অজি ব্যাটার। মার্শকে থামান কুলদীপ যাদব । তাঁর বলে অক্ষর প্যাটেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩৭ রানে ফিরে যান মিচেল মার্শ। সবথেকে বড় বিষয়, বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে কার্যত একহাতে নিজেকে শূন্যে ছুঁড়ে দুরন্ত ক্যাচ নেন অক্ষর। কিন্তু ফের একবার অজিরা ম্যাচে জাঁকিয়ে বসতে শুরু করে। আর সেখানেই আবার আঘাত হানেন সেই কুলদীপ। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান মাত্র ২০ রানে। তবে ট্রেভিস হেডের প্রশংসা করতেই হয়। তাঁর ঝুলিতে ৪৩ বলে ৭৬ রানের লড়াকু ইনিংস। ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। স্টয়নিসকে মাত্র ২ রানে ফেরান অক্ষর, স্মার্ট ক্যাচ নেন হার্দিক। আর অস্ট্রেলিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি বোধহয় পুঁতে দেন যশপ্রীত বুমরা । ট্রেভিস হেডকে ফেরান তিনি।তবে সেখানেই শেষ নয়। ম্যাথু ওয়েডকে শূন্য রানে আউট করেন আর্শদীপ সিং । এক্ষেত্রেও একটি অসাধারণ ক্যাচ নেন কুলদীপ। যে খেলায় একসময় মনে হচ্ছিল যে, অজিরা হয়ত ম্যাচ বের করে নিয়ে যাবে। ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, কার্যত সেই অস্ট্রেলিয়ার হাত থেকেই ম্যাচ বের করে নিয়ে আসল টিম ইন্ডিয়া ।শেষপর্যন্ত, নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ভারতের হয়ে ৩ উইকেট নেন আর্শদীপ সিং এবং ২ উইকেট পান কুলদীপ যাদব। অজিদের ২৪ রানে হারিয়ে, টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলেন রোহিতরা। ম্যাচের সেরা ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। 

error: Content is protected !!