শপথ-জট তো কাটল৷ কিন্তু, তার পাশাপাশি তৈরি হল আরেক জট ৷ শপথগ্রহণ করানো ঘিরে আইনি জট৷ বরানগরের উপ নির্বাচনে নির্বাচিত তৃণমূলপ্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার জয়ী তৃণমূলপ্রার্থী রেয়াত হোসেন সরকারকে বিধায়ক পদে শপথ করানোর বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাবি করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস৷ গোটা বিষয়টি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূর কাছে তিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে৷ শুক্রবার রাজ্যপালের তরফে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে জানানো হয়, ‘দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। অসংবিধানিক শপথ। গত বৃহস্পতিবার ডেপুটি স্পিকারকে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুমতি দেন রাজ্যপাল। তারপরেও কীভাবে স্পিকার শপথ বাক্য পাঠ করালেন।’ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ওই পোস্টে৷ যদিও নব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন না বলে গত বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন অধিবেশন শুরু হওয়ার পরে, ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য স্পিকারের নাম প্রস্তাব করেন৷ তারপরেই তৃণমূলের দুই জয়ী প্রতিনিধিকে বিধায়ক হিসাবে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার৷ স্পিকার যেখানে উপস্থিত সেখানে ডেপুটি স্পিকারকে কোনও দায়িত্ব পালন করতে অতীতে কখনও দেখা যায়নি। সাধারণত, যখন স্পিকার বিধানসভায় উপস্থিত থাকেন, তখন কোনও দায়িত্বপালন করেন না ডেপুটি স্পিকার। যদি ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করাতেন সেটাও স্পিকারের জন্য অসম্মানের হত, একই সঙ্গে সেটা নজিরবিহীনও হত বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। সূত্রের খবর, বিধানসভা রুলস অ্যান্ড বিজনেসের দুই নম্বর চ্যাপ্টারের পাঁচ নম্বর ধারা অনুসারে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন দুই বিধায়ককে। এভাবেই তিনি বিতর্ক এড়ানোর পন্থা নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ তবে, এদিনের জরুরি অধিবেশন বয়কট করা হয় বিজেপির তরফে৷ দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘আমার অফিস গতকাল রাজভবন থেকে একটি চিঠি পায় রাত ৯.২২ মিনিটে, যেখানে উপাধ্যক্ষকে শপথপাঠ করানোর জন্য মনোনীত করা হয় রাজ্যপালের পক্ষ থেকে। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বলা হয়েছিল যে, বিধানসভা বা সংসদে সাংবিধানিক রীতি হিসাবে যদি কিছু মেনে চলা হয়, তাহলে সেটা আইনে থাক বা না থাক, তা রীতি অনুযায়ী মেনে নেওয়া যেতে পারে।’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানতে পারি যে উপ নির্বাচনে জয়ী দুই বিধায়ক রাজ্যপালকে বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুরোধ জানান। এই চিঠি আমাকেও তাঁরা পাঠিয়েছিলেন। পরিষদীয় মন্ত্রী আমার কাছে আবেদন করেন যাতে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে এই দুই বিধায়কের শপথ অনুষ্ঠান করা যায়। আমি সবকিছু বিবেচনা করে এই বিশেষ অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্ত নিই। দুই বিধায়ক নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরেও বিধানসভার সদস্য হিসাবে শপথ নিতে না পারার কারণে, তাঁরা বিধানসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য হতে পারছেন না।’’
Related Posts
আরজি করকাণ্ডে এবার সামনে এলো সন্দীপ ঘোষের সই করা বিস্ফোরক চিঠি!
আরজি কর-কাণ্ডে এবার সামনে সন্দীপ ঘোষের সই সম্বলিত বিস্ফোরক চিঠি! ট্রেইনি ডাক্তারের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরদিনই হাসপাতালে সংস্কার করতে চেয়ে পূর্ত দফতরে চিঠি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। সন্দীপ ঘোষের সই সম্বলিত সেই চিঠি সামনে আসতেই জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ৯ অগাস্ট আরজি করের সেমিনাম রুম থেকে ট্রেইনি ডাক্তারের অর্ধনগ্ন দেহ […]
২ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় পেশ হতে পারে ধর্ষণ বিরোধী বিল!
বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী বিল আনার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায়। বিধানসভায় পেশের অনুমোদন দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা । সূত্রের খবর, বিধানসভায় বিল পেশ হতে চলেছে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর। ইতিমধ্যেই আইনের ড্রাফ্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। ২ তারিখ থেকে রয়েছে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। ৩ তারিখ অর্থাৎ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে পেশ হবে বিল। প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার আবহে শুরু থেকেই […]
RG Kar: রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতেই নাগরিক সমাজের স্লোগান, ‘দফা এক দাবি এক নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ’
নাগরিক সমাজের মিছিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ চাইলেন নাগরিক সমাজের একাংশ। গত কয়েকদিনে খুব চেনা হয়ে যাওয়া স্লোগান সামান্য বদলেও ফেললেন তাঁরা। শোনা গেল, “দফা এক দাবি এক, নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ”। রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মতলা চত্বরের ঘটল এমনই ঘটনা। দলের ধরনা মঞ্চে তখন বসে রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে সাংসদ জগন্নাথ সরকার-সহ […]