নিউ জলপাইগুড়িতে একই লাইনে রাজধানী এবং মালগাড়ি, কোনওক্রমে রক্ষা

ফের একই লাইনে দুটি ট্রেন। ঘটনাস্থল সেই নিউ জলপাইগুড়ি। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে কোনওক্রমে। কারণ, মালগাড়ির গার্ডের তৎপরতা। একাটানা লাল পতাকা নেড়ে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় থেমে যায় দ্রুতগামী রাজধানী এক্সপ্রেস। এড়ানো সম্ভব হয় রাঙাপানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তবে ফের একই ট্র্যাকে সামান্য ব্যবধানে দু’টি ট্রেন চলে আসায় রেলের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। যদিও রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই ঘটনায় সিগন্যাল বা কোনও কারিগরি ব্যর্থতা নেই।  ১৭ জুন এনজেপির কাছেই রাঙাপানিতে একই লাইনে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি। বহু যাত্রী জখম হন। মৃত্যু হয় ১০ জনের। সোমবারও এনজেপি থেকে তিন কিমি দূরে সাহুডাঙিতে একই ধরনের ঘটনা ঘটতে চলেছিল। এনজেপি ছেড়ে আমবাড়ি-ফালাকাটা স্টেশনের দিকে অয়েল ট্যাঙ্কার নিয়ে একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল। পিছনে ছিল ডিব্রুগড়-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস। রেল পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইঞ্জিন বিকল হয়ে বেলা সাড়ে ১২টা সাহুডাঙি রেল ব্রিজের কাছে মালগাড়িটি দাঁড়িয়ে যায়। তার পিছনেই ধেয়ে আসছিল রাজধানী। ওই সময় ট্র্যাকের ১০০-১৫০ মিটার আগে ছিল মালগাড়িটি। রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রী দীপক আরোরা, সেনা আধিকারিক মণীশ ঝা বলেন, ‘হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে আমাদের ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে নেমে দেখি সামনে তেলের ট্যাঙ্কারবাহী একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে। তার গার্ড লাল পতাকা নেড়েই চলেছেন। সেই পতাকা দেখেই হয়তো আমাদের ট্রেনের চালক সময়মতো ট্রেন থামাতে পেরেছেন। না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত।’ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা বলেন, ‘অটো সিগন্যাল ব্যবস্থায় একই লাইনে দু’টি ট্রেন চলাটা অস্বাভাবিক নয়। দু’টি ট্রেন নির্দিষ্ট গতি এবং দূরত্ব বজায় রেখে চলে। এদিন হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় মালগাড়িটি থেমে যায়। অটো সিগন্যালিং ব্যবস্থার কারণেই নিরাপদ দূরত্বে রাজধানী দাঁড়িয়ে যায়। এই ঘটনায় কোনও গাফিলতি, সিগন্যাল বা অন্য কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয় নেই। অন্য ইঞ্জিন এনে মালগাড়িকে সরিয়ে দেড় ঘণ্টা পর রাজধানী এক্সপ্রেসকে যাত্রা করানো হয়।’ এদিকে মাঝপথে মালগাড়ির ইঞ্জিন খারাপ হয়ে যাওয়ায় রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। রেলকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কর্মীর অভাবে রক্ষণাবেক্ষণ শিকেয়। লাইন, ইঞ্জিন কোথাওই ঠিকমতো নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না। বারবার কেন এমন হচ্ছে, এব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা উচিত। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিপিআরও বলেন, ‘সব ঘটনাই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত হবে।’ 

error: Content is protected !!