‘ভোটের জেতার পরই সন্দেশখালিতে যাব, মেছো ভেড়ি নিয়ে রাজনীতি করতে দেব না’, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

সন্দেশখালি নিয়ে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগে জল ঢেলে দিয়ে সন্দেশখালির মানুষের কাছে যাওয়ার আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট জয়ের পর তিনি সন্দেশখালিতে যাবেন, এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো বসিরহাটের জনসভা থেকে। মঙ্গলবার বসিরহাটের মেরুদন্ডী স্লুইস গেটের হেলিপ্যাডের মাঠে তৃণমূল প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলামের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় সন্দেশখালির বিষয় নিয়ে বিজেপিকে এক হাত নিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন,  সন্দেশখালির আসল সত্য প্রকাশ হয়ে গেছে। তবুও সন্দেশখালিতে যা ঘটেছে তা নিয়ে আমি মর্মাহত। আমি জানি সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁসহ সুন্দরবন সংলগ্ন মানুষের এমনিতেই  প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্ভোগের শেষ নেই। তারা সুনামি, আয়লা, বুলবুল, আমফান এর মত ঝড় ঝাপটা নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই করে বেঁচে থাকে। তবুও আমি সাধ্যমত চেষ্টা করি তাদের পাশে থাকার। কয়েক বছর আগেই হাসনাবাদের বনবিবির সেতু যেমন উদ্বোধন করে দিয়েছি । তেমনি হিঙ্গলগঞ্জে বনবিবি দেবীকে পুজো দিতে এসে ওখানকার মন্দিরটি সংস্কার করে দিয়েছি। ‌ টাকিতে দুই বাংলার মিলনক্ষেত্রে  দুর্গাপুজোর বিসর্জন উৎসবের পরিবেশকে আরো সুন্দরভাবে উপভোগ করতে টাকিকে নতুনভাবে সাজানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমি নিজে ইছামতিতে ঘুরে তীরবর্তী গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি।উল্লেখ্য, এদিনের সভায়, বসিরহাট লোকসভা এলাকার প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকরাও  হাজির হয়। যার মধ্যে মহিলারা ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন সকাল থেকেই ইছামতি সহ বিভিন্ন নদীপথে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ নৌকো ভুটভুটি করে তাদের প্রিয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে ও তার বক্তব্য শোনার জন্য হাজির হয় বসিরহাটের জনসভার মাঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বসিরহাটের আরেকটি বৃহৎ শিল্প ইটভাটা নিয়েও তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। বলাবাহুল্য, প্রায় ৫০০র কাছাকাছি ইটভাটা রয়েছে ইছামতি সংলগ্ন এলাকায়। যেখানে কাজ করে প্রায় কয়েক লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই ভাটা গুলি বন্ধ হওয়ার পথে চলে গিয়েছিল।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,  আমরা দু-তিন বছর ধরে সেগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছি। তিনি ইটভাটা মালিকদের পরামর্শ দেন যে সমস্ত প্রয়োজনীয় ও আইনত কাজগুলি এই শিল্পের জন্য করা দরকার সেগুলি দ্রুত করে নেওয়ার। সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাড়োয়া, মিনাখাঁর বিস্তীর্ণ এলাকায় যে মাছ চাষের ভেড়ি রয়েছে তা নিয়ে আমরা পলিসি করছি। যার ভেড়ি সে চাষ করবে। এছাড়া সেল্ফ হেল্প গ্রুপ এর মাধ্যমে এই ভেড়িতে মাছ চাষ করা যাবে। এর জন্য গভর্নমেন্টকে নির্দিষ্টভাবে রেভিনিউ দিতে হবে। সমস্ত ভেড়ির তালিকা করা হবে। কেউ কারো ভেড়ি কেড়ে নিয়ে চাষ করতে পারবে না।উল্লেখ্য এই মেছোভেড়ির জমি কারো কারো কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়ার অভিযোগকে হাতিয়ার করে বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলি ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছিল। তারপরপরই, বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাওয়া ভেড়ির জমি প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংশ্লিষ্ট ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের মাধ্যমে সেই জমি ফেরত দেওয়া হয়ে গেছে। 

error: Content is protected !!